রাসেল ভাইপার (Russell’s viper) দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম ভয়ানক বিষাক্ত সাপ। এটির বৈজ্ঞানিক নাম Daboia russelii। এটি বড় এবং অত্যন্ত বিষাক্ত হওয়ায় মানুষের কাছে বেশ বিপজ্জনক। রাসেল ভাইপার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হল:
বর্ণনা
দৈর্ঘ্য: সাধারনত ১ থেকে ১.৬ মিটার (৩.৩ থেকে ৫.২ ফুট) পর্যন্ত হয়, তবে কিছু রাসেল ভাইপার ২.০ মিটার (৬.৬ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
রঙ: এটির দেহের রঙ সাধারণত হলুদ, ধূসর বা বাদামি হয়, এবং এর দেহে বড় বড় গাঢ় বাদামি বা কালো দাগ থাকে।
চামড়া: এটির চামড়া বেশ মোটা এবং খসখসে হয়।
বাসস্থান
রাসেল ভাইপার সাধারণত খোলা মাঠ, বনাঞ্চল, শস্যক্ষেত্র, এবং ঝোপঝাড়ে বাস করে। এটি মাটির নিচে বা পাথরের ফাঁকে লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে।
খাদ্যাভ্যাস
রাসেল ভাইপার প্রধানত ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, ব্যাঙ, এবং অন্যান্য ছোট সাপ শিকার করে।
প্রজনন
রাসেল ভাইপার ডিম পাড়ে না, বরং এটি সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে। প্রতি প্রসবে সাধারণত ২০-৪০টি বাচ্চা জন্ম দেয়।
বিষ
রাসেল ভাইপারের বিষ অত্যন্ত শক্তিশালী এবং দ্রুত ক্রিয়াশীল। এর বিষের প্রধান উপাদানগুলো হল:
হেমোটক্সিন: এটি রক্তের কোষ ধ্বংস করে এবং রক্ত জমাট বাঁধাতে বাধা দেয়।
নেফ্রোটক্সিন: এটি কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত করে।
সাইটোটক্সিন: এটি দেহের কোষ ধ্বংস করে।
বিষক্রিয়া এবং চিকিৎসা
রাসেল ভাইপারের কামড়ের পর সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা যায়:
তীব্র ব্যথা
ফোলা
রক্তক্ষরণ
বমি
কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস ইত্যাদি
কামড়ানোর পর দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। এন্টি-ভেনম ইনজেকশন প্রয়োজন হয়, যা সরাসরি বিষক্রিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে।
সতর্কতা
রাসেল ভাইপারের এলাকা থেকে দূরে থাকা এবং জঙ্গলে চলার সময় সতর্ক থাকা খুবই জরুরি। যেখানে রাসেল ভাইপারের উপস্থিতি বেশি সেখানকার স্থানীয় মানুষজনকে সচেতন করা উচিত।
রাসেল ভাইপার একটি অত্যন্ত বিষাক্ত এবং বিপজ্জনক সাপ হওয়ায় এর বিষয়ে সচেতন থাকা এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা পাওয়া জরুরি।